তৃতীয় বারের জন্য নবান্ন দখলের পর প্রথমবার সমাবেশ হচ্ছে ২১ জুলাই শহিদ দিবসের। অথচ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে বৃহৎ জনসমাগম নয়, তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বকে ভার্চুয়াল সমাবেশের উপরেই নির্ভর করতে হচ্ছে। তবে সেই ভার্চুয়াল সমাবেশে রেকর্ডসংখ্যক কর্মীর অংশগ্রহণ চাইছে তৃণমূল। আগামী বুধবার ২১ জুলাইয়ের শহিদ দিবসের কর্মসূচিতে কর্মী-সমর্থকদের অন্তত ৫০ লক্ষ অংশগ্রহণ চাইছে কালীঘাট। রবিবারই দলের শীর্ষ নেতৃত্ব মারফৎ সেই মর্মে নির্দেশ চলে গিয়েছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে। নির্দেশে বলা হয়েছে, ২১ জুলাই দু\’দফায় শহিদ দিবসের কর্মসূচি পালন করবেন বুথ স্তরের কর্মীরা। যেমন নির্দেশ দেওয়া হয়ছে, সেই ভাবেই পালন করতে হবে শহিদ দিবস।

প্রথম পর্যায়ে প্রতিটি বুথে সকাল ১০টায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সমবেত হবেন ৫০ জন করে কর্মী। প্রথমে দলীয় পতাকা উত্তোলন ও পরে শহিদ বেদীতে মাল্যদান করে ১৯৯৩ সালে প্রয়াত শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ের দুপুর দুটোয় ফের বুথে কর্মীদের আসতে বলা হয়েছে। সেখানেই টিভি কিংবা জায়ান্ট স্ক্রিন লাগিয়ে সব নেতা ও কর্মীকে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণ শুনতে হবে। গত বছরের মতোই কালীঘাটের দফতর থেকেই মমতা ভাষণ দেবেন। দু’টি পর্যায়ে শহিদ দিবস পালন অর্থাৎ, প্রথমে মাল্যদান এবং পরে নেত্রীর ভাষণ শোনার ও শোনানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এলাকার বিধায়কদের। প্রত্যেকটি বুথে যাতে দলীয় কর্মসূচি পালন করা হয়, তাঁদের সে ব্যাপারে কড়া নজর রাখতে হবে। দায়িত্ব পেয়ে অনেক বিধায়ক বুথ কমিটির সভাপতিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সেই নির্দেশ ইতিমধ্যে পাঠিয়ে দিয়েছেন বলেই খবর। কিছু ক্ষেত্রে আবার বুথ স্তরে আয়োজিত ওই দলীয় কর্মসূচির ছবি এবং ভিডিয়ো বিধায়করা তাঁদের দফতরে পাঠাতে বলেছেন। যেখানে তৃণমূল বিধায়ক নেই, সেখানে ওই দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে জেলা সভাপতি তথা ব্লক সভাপতিদের। কালীঘাট থেকে পাঠানো নির্দেশে আরও কিছু বলা হয়েছে, করোনা বিধি মেনে প্রত্যেক বুথে যাতে কমপক্ষে ৫০ জন কর্মী উপস্থিত হয়ে অংশ নেন দলীয় কর্মসূচিতে, সেই দায়িত্ব নিতে হবে প্রত্যেক বুথ সভাপতিকে।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ এবং ২০১৯ সালের নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে বুথের সংখ্যা ছিল ৭৮,৯০৩। কোভিড সংক্রমণের কারণে এবার বুথের সংখ্যা বেড়েছে ৩০ শতাংশ ২২,৮৮৭। তাই এখন পশ্চিমবঙ্গে মোট বুথের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ১,৭৯০। তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশ, সব বুথেই পালন করতে হবে কর্মসূচি। এই এক লক্ষের বেশি বুথে ৫০ জন করে কর্মী কর্মসূচিতে অংশ নিলে তা সহজেই ৫০ লক্ষ ছাড়িয়ে যাবে। ২০১৯ সাল পর্যন্ত ধর্মতলায় সমাবেশ আয়োজিত হত শহিদ দিবসের। সেখানেই তৃণমূল নেত্রী নতুন ভিড়ের রেকর্ড গড়তেন। কিন্তু এবার ভার্চুয়াল সমাবেশে নিজেদের তৈরি পুরনো সমস্ত রেকর্ড ভাঙতে চান তৃণমূল নেতৃত্ব। এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘এবার পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও অসম, ত্রিপুরা, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, গুজরাট-সহ একাধিক রাজ্যে দিদির ভাষণ শোনানোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে শহিদ দিবসে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে দিদির ভাষণ রেকর্ড সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে দল যাবতীয় সব উদ্যোগ নিয়েছে। সে কারণেই হয়তো অন্তত ৫০ লক্ষ কর্মীর উপস্থিতি চাইছে ডিজিটাল মাধ্যমের কর্মসূচিতে। তবে আমরা জানি, সেই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে কয়েক কোটি মানুষ সেদিন ভাষণ শুনবেন দিদির।‘