স্বপ্ন জুনিয়র ছেড়ে সিনিয়র সার্কিটে খেলার। কিন্তু টেনিসের নিয়ম অনুসারে সব কিছু তার হাতে যে নেই। তাই জুনিয়র উইম্বলডন জিতে ইতিহাস গড়লেও সমীর বন্দ্যোপাধ্যায় এখনই নিশ্চিত নয় বড়দের যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে নামাটা।

সিনিয়র যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে খেলা নির্ভর করছে তার আগের প্রতিযোগিতা গুলিতে নিজের পারফর্ম্যান্সের ওপর। বড়দের সঙ্গে খেলতে হলে ওকে জিতে আসতে হবে আমেরিকার হার্ড কোর্ট ন্যাশনাল।
সতেরো বছরের সমীর বলে, ‘ভবিষ্যতে সিনিয়রে খেলার ইচ্ছে অবশ্যই আছে আমার। সিনিয়রে খেলতে হলে হার্ড কোর্ট ন্যাশনাল জিততে হবে আমায়। তবেই সিনিয়রে খেলার সুযোগ আসবে। সেটা না হলে এবার খেলব জুনিয়র ইউএস ওপেন।‘
যুক্তরাষ্ট্র ওপেন আগামী ৩০ অগস্ট থেকে শুরু হবে। চলবে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। জুনিয়রদের যুক্তরাষ্ট্র ওপেন শুরু হবে ৬ সেপ্টেম্বর। ফাইনাল ১১ সেপ্টেম্বর। আপাতত ছেলেটি উইম্বলডন জয় ভুলে পুরনো রুটিনে ফিরে গিয়ে লেখাপড়ার সঙ্গে টেনিস চর্চা শুরু করে দিয়েছে।
গত ১২ জুলাই নিউ জার্সির বাড়িতে ফিরেছে উইম্বলডনজয়ী সমীর। স্বভাবতই ছেলের এমন সাফল্যে উল্লসিত ওর বাবা-মা। গত কয়েক দিন ধরে যেন বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারে উৎসবের মেজাজ। সদ্য ঘাসের কোর্ট দাপানো ছেলে ওর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানিয়ে দিল।
সমীর জানাল, ‘আমাদের পরিবারে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয় পড়াশোনাকে। এর সঙ্গে আমি টেনিসও চালিয়ে নিয়ে যেতে চাই। অনেক ছোটবেলা থেকে প্রশিক্ষণ নিচ্ছি এর জন্য। এর সুফল হল জুনিয়র উইম্বলডন জয়। তাই পড়াশোনাকে আগে গুরুত্ব দিয়ে জুনিয়র ইউএস ওপেনের জন্য নিজেকে তৈরি করছি এখন। তা ছাড়া জাতীয় পর্যায় ও কলেজের একাধিক প্রতিযোগিতা তো আছেই।‘
ছোটবেলা থেকেই ওর বাড়তি প্রেম টেনিসের প্রতি। সেটা লক্ষ্য করেছেন বাবা কুণাল বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই ছেলেকে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা ইভি লিগ কলেজে ছেলেকে ভর্তি করেছেন। এই ইভি লিগ কলেজের অধীনে আবার রয়েছে ন্যাশনাল কলেজিয়েট অ্যাথলেটিক অ্যাশোসিয়েশন (নাকা), যাকে টেনিসের আঁতুড়ঘর বলা হয় যুক্তরাষ্ট্রে।
লেখাপড়ার সঙ্গে সেই কলেজে তার অনেক বছর থেকে চলছে টেনিস পাঠ। একটা সময় জন ম্যাকেনরো, কেভিন অ্যান্ডারসন, জ্যাক শকের মতো প্রাক্তনরা এই কলেজ থেকেই বেড়ে উঠেছেন। আমেরিকায় লেখাপড়া করার সুবাদে মহেশ ভূপতি, সোমদেব দেব বর্মনের মতো ভারতীয়রাও এখানে খেলেছেন আয়োজিত আমেরিকার আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় টেনিস প্রতিযোগিতায়। এই কলেজে নাম লিখিয়ে সমীর এখন এগিয়ে যেতে চাইছে প্রাক্তনদের অনুসরণ করে।
বাবাও রয়েছেন কৃতি ছেলের পাশে। বললেন, ‘টেনিসের পেশাদার সার্কিটে সুনাম অর্জন করতে হলে অনেক পরিশ্রম করতে হবে। সঙ্গে লেখাপড়াও খুব জরুরী। তাই ইভি লিগ কলেজের অধীনে ন্যাশনাল কলেজিয়েট অ্যাথলেটিক অ্যাশোসিয়েশনকে ওর জন্য বেছে নিয়েছি আমি। কারণ আমরাও সমীরের এই স্বপ্ন নিয়ে বাঁচতে চাই।‘